ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫ , ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুসন্ধান

ট্রাম্পের ২৯ মিলিয়ন ডলার অর্থায়নের অ‌ভিযোগ সত্য নয়

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৩-০৩-২০২৫ ০৭:২৪:২৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৩-০৩-২০২৫ ০৭:৪৭:০২ অপরাহ্ন
ট্রাম্পের ২৯ মিলিয়ন ডলার অর্থায়নের অ‌ভিযোগ সত্য নয়
মার্কিন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা ইউএসএইডের ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাংলাদেশের দুইজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কোনো সংস্থাকে প্রদান করার অভিযোগটি সত্য নয় বলে দাবি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার (৩ মার্চ) মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

এতে বলা হয়, বাংলাদেশে ইউএসএইডের অর্থায়নে ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ প্রকল্পটি নিয়ে কিছু তথ্য দিয়েছেন যা নিয়ে জনমনে ব্যাপক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুসন্ধান করেছে।

অনুসন্ধানের তথ্য তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ইউএসএইড যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালকে (ডিআই) নির্বাচিত করে। প্রকল্প প্রস্তাবনা আহ্বায়নের প্রেক্ষিতে অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে এবং একটি স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া অনুসরণের মধ্য দিয়ে ইউএসএইড সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করে। ২০১৭ সালের মার্চে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিআই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে। পরবর্তীতে প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় এবং এর অর্থ আসে ধাপে ধাপে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শুরুতে এসপিএল প্রকল্পটি ছিল ৫ বছর মেয়াদি এবং বাজেট ছিল ১৪ মিলিয়ন ডলার। প্রকল্পটির ব্যবস্থাপনায় ছিল ইউএসএইড এবং অর্থায়নে ছিল ইউএসএইড ও আমেরিকার উন্নয়ন সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ডিএফআইডি (বর্তমানে এফসিডিও)। এই প্রকল্পে ডিএফআইডির অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি ছিল ১০ মিলিয়ন ডলার।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে গভর্নরস ওয়ার্কিং সেশনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে আমেরিকা ২৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে। মাত্র ২ সদস্যের একটি অপরিচিত বাংলাদেশি ফার্ম এই সহায়তা পেয়েছে।

এর দুই দিন পর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘২৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। এনজিও ব্যুরো বলেছে, এমন কোনো তথ্য নেই।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তিতে বলছে, এসপিএল প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাস করে শান্তি ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান তৈরি, দলগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার উন্নয়ন এবং প্রতিনিধিত্বমূলক নেতৃত্বের বিকাশে উৎসাহ প্রদান। প্রকল্পের অধীনে ডিআই বাংলাদেশে জরীপ কার্যক্রমও পরিচালনা করে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইউএসএইডের প্রকল্পের ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা নীতি অনুসরণ করাটা বাধ্যতামূলক। এতে আর্থিক নিরীক্ষার প্রক্রিয়াটি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার কয়েক বছর পরও এ সংক্রান্ত নথিপত্র সংরক্ষণ করা হয়। প্রয়োজনে পুনর্নিরীক্ষা করা হয়। 

অনুসন্ধানের তথ্য তুলে ধরে এতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে আমেরিকায় নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে এসপিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে। তাই এটি বাংলাদেশের দুইজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কোনো সংস্থাকে প্রদান করার অভিযোগটি সত্য নয়। বস্তুত এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় বাংলাদেশ ও আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তির মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষের কোনো কিছু করার ক্ষমতা থাকে না।’


বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ